Tuesday, July 17, 2012

গণভবন না কড়া ভবন!!!


গণভবন না কড়া ভবন!!!

নামটা শুনলে মনে হয় যেন এমন একটি ভবন যেখানে যখন তখন যে কোন মানুষ,মানে গন-মানুষ যেতে পারেন। কিন্তু না। যেখানে যেতে হলে আপনাকে কিছু বিরক্তিকর ঝামেলা পোহাতেই হবে যদি না আপনি হন ভিভিআইপিদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত বিশেষ বাহিনীর সদস্য। আমরা যারা সাংবাদিকতা করি তাঁদের বাধ্য হয়েই সেখানে যেতে হয়,বিশেষ করে পরাধীন এবং গোলামীর চাকরিটা বাঁচাতে। আজ সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে সেখানে গেলাম। দেখলাম আমার সহকর্মী সিনিয়র সাংবাদিক শামিম ভাই বসে আছেন। আমি তাঁর সাথে সাংবাদিকতার বাইরের কিছু  বিষয় নিয়ে যেমন আমার রোগ-শোঁক নিয়ে কিছু পরামর্শ নিচ্ছিলাম। এরপর দেখলাম আসলেন কানাই দা। সেখানে দেখা হয়ে গেল ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য়ে আমার প্রিয় দুই ছোট ভাই বাদশা এবং নাজমুলের সাথে। বাদশার মাথায় আদর করে হাত বুলিয়ে দিলাম। অনেকে আমার কাছে বলেছে যে বেচারার নাকি মন-মানসিকতা অনেক ছাত্রলীগ নেতার চেয়ে  অনেক অনেক গুণ ভাল। কিন্তু বয়সের ফাঁদে পড়ে তাঁর প্রাপ্য পদটাও পেল না। নাজমুলকে জিজ্ঞাস করলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আজকে ছাত্রলীগ নেতা খুনের পর কি অ্যাকশন নিচ্ছে। শিবির নিয়েও কিছু কথা হল। এরমধ্যে অনেক সাংবাদিক সহকর্মীরা এসে পড়লো। সময় এগিয়ে আসছে বলে আমরা নিরাপত্তা পাস নিয়ে ঢুকতে গেলাম। পরপর দুইটি আর্চওয়ে পার করে,মানে নিরাপতা চেকিং করার শেষ পর্যায়ে আমার হাতে থাকা মিনি অডিও রেকর্ডার নিয়ে বার বার পরীক্ষা করছিলো পুলিশের বিশেষ শাখার এক সদস্য। আমি খুব বিরক্ত হচ্ছিলাম। ভাবছিলাম এ কেমন গোয়েন্দা সদস্য যে সাংবাদিকদের মিনি রেকর্ডার চিনতে পারে না। আমার খুব হাসিও পাচ্ছিলো। কারন আমার এই মিনি অডিও রেকর্ডার নিয়ে তাঁকে খুব চিন্তিত দেখাচ্ছিল। হয়তো তাঁর আবার ভয়ও হচ্ছিলো যে বেটা সাংবাদিক,কি না কি লেখে দেয় যদি সাংবাদিকদের সাথে বেশি বাড়াবাড়ি করে ফেলে। আমি তাঁর সাথে হেসে হেসে কথা বলতে থাকায় সে পরে আমাকে বলে ফেললো - প্লীজ,আমাকে এটা একটো  অন-অফ করে দেখাবেন? আমি দেখালাম। পরে আমার সে একই নিরাপত্তা চেকিং। দামি আর্চওয়ের সাথে বাড়তি যোগ হচ্ছে কালো পোশাকদারী র‍্যাব এবং তাঁদের অতিদামি বিদেশী ড্রগ স্কোয়াড। সেখান থেকে পায়ে হেটে হেটে গণভবনের মুল গেটে এসে আবার সে নিরাপত্তা চেকিং। 


যাক,এভাবেই চলে আসলাম সেই রুমে। আমি কিছু পাপীদেরও দেখলাম। দেখলাম কিছু হাইব্রিড নেতাদের। অনেকে এমনকি আমার অনেক সাংবাদিক সহকর্মীরাও  কেন যেন  এই সব নেতা-পাতি নেতারা পাশ দিয়ে গেলেই উঠে দাড়িয়ে সম্মান জানালেন। আমার আবার এই সব অভ্যাস কম। তাই যখন একমাত্র আপা আসলেন তখনই আমি অন্যান্যদের সাথে দাড়িয়ে সম্মান জানালাম। কিছু কষ্টও পেলাম কিছু কারনে। চা চেয়ে না পেয়ে আরেকটো বাড়তি অভিমান নিয়ে চলে আসলাম। অফিসে আসার আগে গাজী তরুণ ভাইয়ের অফিসে আমার এক ছোট ভাই সূফী সম্রাট খ্যাত কণ্ঠ শিল্পী পারভেজের সাথে একটা আলাপে অংশ নিয়ে আলাপের ফাকে ফাকে কম্পিউটারে বসে খবর লিখে পাঠালাম অফিসে। কোন নোট না দেখে এবং ভয়েস রেকর্ডা না শুনেই। মোটামুটি যা মনে ছিল তাই লিখলাম।

জানিনা কালকে চাকরীটা থাকবে কি না। দেখা যাক।কথায় আছে না, বাঁচায় আল্লাহ্‌, মারে কে, তাই না।      

No comments: